কুমিল্লা থেকে সিলেট ট্রেনের সময়সূচী
বাংলাদেশের মানুষ সবসময়ই রেলভ্রমণকে একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক যাত্রা মাধ্যম হিসাবে দেখে এসেছে। বিশেষ করে দীর্ঘ দূরত্বের ক্ষেত্রে ট্রেনের মতো নিরাপদ, শান্ত ও নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ
আর নেই বললেই চলে। আমাদের দেশে এটির জনপ্রিয়তা দিন দিন আরও বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনা, জ্যাম ও বাড়তি ভাড়ার চাপ থেকে বাঁচতে মানুষ বেশি ঝুঁকছে ট্রেনে ভ্রমণের দিকে। ঠিক একইভাবে কুমিল্লা ↔ সিলেট রুটটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেলরুট হিসেবে পরিচিত।
এই রুটে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী যাতায়াত করেন—হতে পারে তা অফিস, ব্যবসা, পরিবার, চিকিৎসা বা পর্যটন যাত্রা। সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক অঞ্চল, তাই কুমিল্লা থেকে সিলেট ভ্রমণকারীর সংখ্যা সবসময়ই বেশি। আবার সিলেট থেকেও শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ কুমিল্লা যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেন।
এই বিশাল ব্লগ পোস্টটিতে আমরা কুমিল্লা থেকে সিলেট এবং সিলেট থেকে কুমিল্লা রুটের সর্বশেষ সময়সূচী, ভাড়া, দূরত্ব, যাত্রার টিপস, অনলাইন টিকিট কিভাবে কিনবেন—সবকিছু একসঙ্গে তুলে ধরছি, যাতে একবার পড়লেই আপনার সব তথ্য জেনে নেওয়া হয়ে যায়।
পেজ সূচিপএ : কুমিল্লা থেকে সিলেট ট্রেনের সময়সূচী
-
কেন কুমিল্লা ↔ সিলেট ট্রেন রুট এত গুরুত্বপূর্ণ?
-
কুমিল্লা থেকে সিলেট রুটে কোন কোন ট্রেন চলে?
-
কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচী (২০২৫)
-
সিলেট টু কুমিল্লা ট্রেনের সময়সূচী (২০২৫)
-
কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের ভাড়া (২০২৫ আপডেট)
-
কুমিল্লা থেকে সিলেট দূরত্ব কত?
-
অনলাইনে টিকিট কিভাবে কাটবেন?
-
কুমিল্লা ↔ সিলেট ট্রেনে ভ্রমণের সুবিধা
-
কেন সিলেট ভ্রমণ করবেন?
-
❓ FAQ / সাধারণ প্রশ্নোত্তর
-
🛤️ কুমিল্লা থেকে সিলেট ট্রেন ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় টিপস
-
🚆 কুমিল্লা থেকে সিলেট রুটে ট্রেনের বিভিন্ন শ্রেণী ও সুবিধা
- উপসংহার
কেন কুমিল্লা ↔ সিলেট ট্রেন রুট এত গুরুত্বপূর্ণ?
সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্বর্গ। এখানকার চা বাগান, পাহাড়ি দৃশ্য, নদী, ঝর্ণা এবং প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য দেখতে হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভ্রমণ করেন। অন্যদিকে কুমিল্লা বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহরগুলোর একটি, যেখানে শিক্ষা, ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রচুর।
এই দুটি শহরকে সংযোগকারী রেলপথ মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে এবং শান্ত পরিবেশে দীর্ঘ ভ্রমণের সুবিধা দিয়ে থাকে। বারবার রেলপথ ধরে যাতায়াত করা মানুষদের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে—ট্রেন কখন ছাড়ে, কখন পৌঁছে, কোন ট্রেনে কী সুবিধা রয়েছে, কোনদিন ছুটি, এবং ভাড়া কত।
কুমিল্লা থেকে সিলেট দূরত্ব সড়কপথের তুলনায় রেলপথে কিছুটা বেশি হলেও আরামের দিক দিয়ে ট্রেন ভ্রমণ অনেক এগিয়ে। রাতে ভ্রমণ করলে যাত্রা হয়ে যায় আরও স্বস্তিদায়ক। এজন্য অনেক যাত্রী বাসের তুলনায় ট্রেনের ওপর বেশি নির্ভরশীল।
এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ট্রেনগুলো চলে, কোন সময় যাত্রা শুরু হয়, এবং কোন ট্রেনে কী সুবিধা আছে।
আরো পড়ুন : ঢাকা টু চাঁদপুর লঞ্চ সময়সূচি ২০২৫
কুমিল্লা থেকে সিলেট রুটে কোন কোন ট্রেন চলে?
বর্তমানে কুমিল্লা → সিলেট রুটে মোট ২টি প্রধান আন্তঃনগর ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে থাকে:
১) পাহাড়িকা এক্সপ্রেস
এটি বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী আন্তঃনগর ট্রেন। পাহাড়িকা এক্সপ্রেস মূলত চট্টগ্রাম–সিলেট রুটে চলাচল করে। ট্রেনটির যাত্রা খুবই আরামদায়ক এবং সময়নুবর্তিতাও ভালো। এতে শোভন, শোভন চেয়ার, স্নিগ্ধা এবং এসি কোচ পাওয়া যায়।
২) উদয়ন এক্সপ্রেস
উদয়ন এক্সপ্রেস হল এই রুটের সবচেয়ে দ্রুত এবং উন্নতমানের ট্রেন। এটি মূলত রাতের ট্রেন হওয়ায় যাত্রীরা আরাম করে ঘুমিয়ে যেতে পারেন এবং সকালে সিলেটে নেমে দিনের কাজ শুরু করতে পারেন। এতে আধুনিক সিট এবং স্নিগ্ধা কামরা রয়েছে।
উপরের দুই ট্রেন পুরো রুটজুড়ে যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য সেবা প্রদান করে।
আরো পড়ুন : ফ্রি টাকা ইনকাম বিকাশে পেমেন্ট
কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচী (২০২৫)
নীচের টেবিলে কুমিল্লা → সিলেট রুটের সর্বশেষ সময়সূচী বিস্তারিত দেওয়া হলো:
| ট্রেনের নাম | ছাড়ার সময় (কুমিল্লা) | পৌঁছানোর সময় (সিলেট) | সাপ্তাহিক ছুটি |
|---|---|---|---|
| পাহাড়িকা এক্সপ্রেস (৭১৯) | সকাল ১০:২১ মিনিট | বিকাল ৪:২০ মিনিট | সোমবার |
| উদয়ন এক্সপ্রেস (৭২৩) | রাত ১:০১ মিনিট | সকাল ৬:০০ মিনিট | রবিবার |
সময়সূচী সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত তথ্য
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস দিনের বেলায় চলে, তাই যারা দিনের মধ্যে ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য এটি উপযুক্ত।
-
উদয়ন এক্সপ্রেস রাতের ট্রেন, যা কর্মজীবী বা অফিসগামী মানুষদের জন্য আরামদায়ক।
-
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে টিকিট পাওয়া কঠিন, তাই এক–দুই দিন আগে বুকিং করা ভালো।
সিলেট টু কুমিল্লা ট্রেনের সময়সূচী (২০২৫)
নিচে সিলেট → কুমিল্লা রুটের সময়সূচী দেওয়া হলো:
| ট্রেনের নাম | ছাড়ার সময় (সিলেট) | পৌঁছানোর সময় (কুমিল্লা) | সাপ্তাহিক ছুটি |
|---|---|---|---|
| পাহাড়িকা এক্সপ্রেস (৭২০) | সকাল ১০:১৫ মিনিট | বিকাল ৩:৩০ মিনিট | সোমবার |
| উদয়ন এক্সপ্রেস (৭২৪) | রাত ৯:০০ মিনিট | রাত ১:৫০ মিনিট | রবিবার |
যা খেয়াল রাখবেন
-
উদয়ন এক্সপ্রেস তুলনামূলক দ্রুত ও সময়মতো পৌঁছায়।
-
পাহাড়িকা দিনের ট্রেন হওয়ায় যারা প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে চান তাদের জন্য এটি দারুণ উপভোগ্য।
কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের ভাড়া (২০২৫ আপডেট)
নিচে কামরা অনুযায়ী ভাড়া দেওয়া হলো:
| আসন শ্রেণি | টিকিট মূল্য |
|---|---|
| শোভন | ১৪৫ টাকা |
| শোভন চেয়ার | ১৭০ টাকা |
| প্রথম সিট | ২৩৮ টাকা |
| প্রথম বার্থ | ৩৪০ টাকা |
| স্নিগ্ধা | ৩১৮ টাকা |
| এসি সিট | ৩৯১ টাকা |
| এসি বার্থ | ৫৮৭ টাকা |
ভাড়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
-
অনলাইন টিকিট কাটা হলে অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ যুক্ত হবে।
-
আসন অনুযায়ী সুবিধা ভিন্ন হয়।
-
এসি বার্থ সবচেয়ে আরামদায়ক, তবে দাম বেশি।
কুমিল্লা থেকে সিলেট দূরত্ব কত?
বেশিরভাগ যাত্রীর সাধারণ প্রশ্ন—কমিল্লা টু সিলেট দূরত্ব আসলে কত?
১. রেলপথে দূরত্ব:
➡ প্রায় ৩৭৯.৫ কিলোমিটার
রেলপথটি সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল এবং বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে যায় বলে দূরত্ব বেশি হয়।
২. সড়কপথে দূরত্ব:
➡ প্রায় ২০৬.৯ কিলোমিটার
সড়কপথে সময় লাগে ৫–৬ ঘণ্টা, কিন্তু ট্রেন ভ্রমণ তুলনামূলক আরামদায়ক।
অনলাইনে টিকিট কিভাবে কাটবেন? (সহজ টিউটোরিয়াল)
অনলাইন টিকিট কাটার প্রক্রিয়া খুব সহজ। নিচে ধাপগুলো দেওয়া হলো:
ধাপ–১: ওয়েবসাইটে যান
➡ eticket.railway.gov.bd
ধাপ–২: অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
-
মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন
-
OTP দিয়ে ভেরিফাই
ধাপ–৩: যাত্রার তথ্য দিন
-
From: Comilla
-
To: Sylhet
-
Date: আপনার ভ্রমণ তারিখ
ধাপ–৪: ট্রেন নির্বাচন করুন
-
উদয়ন বা পাহাড়িকা
-
আপনার পছন্দের সিট টাইপ বাছাই করুন
ধাপ–৫: পেমেন্ট সম্পন্ন করুন
-
বিকাশ / নগদ / রকেট / কার্ড
-
পেমেন্ট হবার সাথে সাথে টিকিট ইমেইলে চলে যাবে
আপনি চাইলে PDF করে ডাউনলোড করতে পারবেন।
কুমিল্লা ↔ সিলেট ট্রেনে ভ্রমণের সুবিধা
কেন বাসের পরিবর্তে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন?
কারণগুলো সহজ—
১. দীর্ঘ যাত্রায় কম ক্লান্তি
ট্রেনে সিটের জায়গা বড়, এবং নড়াচড়া করা সহজ।
২. কম খরচে বেশি সুবিধা
শুধু ১৪৫ টাকায় কুমিল্লা থেকে সিলেট যাওয়া যায়—যা বাসের চেয়েও কম।
৩. ট্রাফিক নেই
জ্যাম নেই, ফলে সময়মতো পৌঁছার সম্ভাবনা বেশি।
আরো পড়ুন : MRF টায়ারের দাম বাংলাদেশ 2025
৪. লাগেজ নেওয়া সহজ
অনেক লাগেজ নিয়েও ভ্রমণ করতে পারবেন।
৫. নিরাপদ
রাস্তায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি হলেও রেলপথ নিরাপদ।
ভ্রমণের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
-
সাপ্তাহিক ছুটি দেখে টিকিট কাটুন
-
১৫–২০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছান
-
অনলাইন টিকিট হারালে সহজে পুনরায় ডাউনলোড করা যায়
-
নিরাপত্তার জন্য নিজের ব্যাগ নিজের কাছে রাখুন
-
ট্রেনের জানালা দিয়ে মাথা–হাত বের করবেন না
-
বাচ্চাদের নিয়ে ভ্রমণ করলে তাদের প্রতি নজর রাখুন
যদি আপনি পরিবার নিয়ে ভ্রমণ করেন…
তাহলে স্নিগ্ধা বা এসি সিট নেওয়া ভালো।
এতে হালকা ঠান্ডা, আরামদায়ক পরিবেশ এবং পরিষ্কার কামরা পাওয়া যায়।
কেন সিলেট ভ্রমণ করবেন?
কুমিল্লা থেকে সিলেট যেতে চাওয়ার প্রধান কারণ হলো পর্যটন। সিলেটে আপনি ঘুরে দেখতে পারবেন—
-
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট
-
জাফলং
-
বিছানাকান্দি
-
মালনীছড়া চা বাগান
-
মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
-
চা বাগান এলাকা
-
বিভিন্ন পাহাড়ি দৃশ্য
এক কথায়—সিলেট প্রকৃতি প্রেমীদের স্বর্গ।
আরো পড়ুন : বেক্সট্রাম গোল্ড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
❓ FAQ / সাধারণ প্রশ্নোত্তর
১) কুমিল্লা থেকে সিলেট কত কিলোমিটার?
কুমিল্লা থেকে সিলেট রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৩৭৯.৫ কিলোমিটার, এবং সড়কপথে প্রায় ২০৬.৯ কিলোমিটার।
২) কুমিল্লা থেকে সিলেট কোন কোন ট্রেন যায়?
এই রুটে বর্তমানে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে—
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস
-
উদয়ন এক্সপ্রেস
৩) কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচী কী?
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস: সকাল ১০:২১ মিনিট
-
উদয়ন এক্সপ্রেস: রাত ১:০১ মিনিট
৪) সিলেট থেকে কুমিল্লা ট্রেন কখন ছাড়ে?
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস: সকাল ১০:১৫ মিনিট
-
উদয়ন এক্সপ্রেস: রাত ৯:০০ মিনিট
৫) কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি কোন দিন?
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস: সোমবার
-
উদয়ন এক্সপ্রেস: রবিবার
৬) কুমিল্লা থেকে সিলেট যেতে কত সময় লাগে?
সাধারণত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে, ট্রেনের ধরন অনুযায়ী সময় পার্থক্য হয়।
৭) কুমিল্লা টু সিলেট ট্রেনের ভাড়া কত?
ভাড়া আসন অনুযায়ী ভিন্ন—
-
শোভন: ১৪৫ টাকা
-
শোভন চেয়ার: ১৭০ টাকা
-
স্নিগ্ধা: ৩১৮ টাকা
-
এসি সিট: ৩৯১ টাকা
-
এসি বার্থ: ৫৮৭ টাকা
৮) কোথায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়?
-
নিকটস্থ রেলস্টেশনে
-
অনলাইনে eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইটে
-
মোবাইল অ্যাপ থেকেও টিকিট কেনা যায়
৯) অনলাইনে ট্রেন টিকিট কিনতে কী লাগে?
মোবাইল নম্বর, ইমেইল, NID (অপশনাল) এবং মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ/নগদ/রকেট/কার্ড) প্রয়োজন।
১০) রাতের ট্রেনে ভ্রমণ নিরাপদ কি?
হ্যাঁ, উদয়ন এক্সপ্রেস রাতের ট্রেন এবং এটি খুবই নিরাপদ ও আরামদায়ক। যাত্রীরা নির্ভয়ে ভ্রমণ করতে পারেন।
১১) কুমিল্লা থেকে সিলেট যেতে কোন ক্লাসের টিকিট ভালো?
-
কম বাজেট হলে: শোভন / শোভন চেয়ার
-
আরাম চাইলে: স্নিগ্ধা
-
পরিবার বা শিশু থাকলে: এসি সিট বা এসি বার্থ
১২) ট্রেনের সময়সূচী কি পরিবর্তন হতে পারে?
হ্যাঁ, জাতীয় ছুটি, রক্ষণাবেক্ষণ বা বিশেষ কারণে সময়সূচী পরিবর্তিত হতে পারে। তাই যাত্রার আগে অবশ্যই যাচাই করা ভালো।
১৩) ট্রেনে খাবার পাওয়া যায় কি?
হ্যাঁ, আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে খাবার বিক্রি হয়। তবে যাত্রীদের অনেকেই নিরাপত্তার জন্য নিজের খাবার সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করেন।
আরো পড়ুন : মরিয়ম ফুল খাওয়ার নিয়ম
১৪) টিকিট কাটা হয়ে গেলে কি রিফান্ড হয়?
অনলাইন টিকিটের ক্ষেত্রে সাধারণত রিফান্ড পাওয়া যায় না। নিয়ম ভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে রেলওয়ের রিফান্ড নীতিমালা দেখা উচিত।
১৫) কুমিল্লা থেকে সিলেট ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় কোনটি?
ভ্রমণের উদ্দেশ্য ভেদে—
-
পরিবার নিয়ে গেলে: দিনের ট্রেন (পাহাড়িকা)
-
অফিস কাজ বা সময় বাঁচাতে চাইলে: রাতের ট্রেন (উদয়ন)
🛤️ কুমিল্লা থেকে সিলেট ট্রেন ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় টিপস
কুমিল্লা ↔ সিলেট রুটে ট্রেন ভ্রমণ নিরাপদ ও আরামদায়ক হলেও কিছু ছোট খুঁটিনাটি টিপস মানলে যাত্রা হবে আরও ঝামেলামুক্ত এবং স্বস্তিদায়ক।
১. ট্রেনের সময়সূচী আগে থেকেই যাচাই করুন
-
ট্রেন কখন ছাড়ে এবং কখন পৌঁছায় তা রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চেক করুন।
-
বিশেষ করে ছুটির দিন বা উৎসবকালীন সময়ে সময়সূচী পরিবর্তিত হতে পারে।
২. সাপ্তাহিক ছুটি এবং ছুটির দিনে বুকিং
-
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস: সোমবার বন্ধ
-
উদয়ন এক্সপ্রেস: রবিবার বন্ধ
-
এই দিনগুলোতে ট্রেন চলবে না। তাই আগে থেকেই টিকিট বুক করুন।
৩. অনলাইন টিকিট বুকিং
-
মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে eticket.railway.gov.bd ব্যবহার করুন।
-
রেলস্টেশনের লাইনের ঝামেলা এড়াতে অনলাইন টিকিট সবচেয়ে সুবিধাজনক।
৪. স্টেশনে সময়মতো পৌঁছানো
-
ট্রেন ছাড়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছান।
-
এটি আপনাকে বিশ্রাম নেওয়া এবং ট্রেনের জন্য প্রস্তুতি নিতে সময় দেবে।
৫. আসন নির্বাচন ও সুবিধা
-
দিনের ট্রেন: পাহাড়িকা এক্সপ্রেস → প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
-
রাতের ট্রেন: উদয়ন এক্সপ্রেস → ঘুমিয়ে নিরাপদে যাত্রা করতে পারেন।
-
পরিবার বা শিশু থাকলে স্নিগ্ধা বা AC কোচ বেছে নিন।
-
বাজেট কম হলে: শোভন বা শোভন চেয়ার যথেষ্ট।
৬. লাগেজ ও নিরাপত্তা
-
ব্যাগ এবং মূল্যবান জিনিস সবসময় আপনার কাছে রাখুন।
-
ট্রেনে স্টেশনে উঠা-নামার সময় ব্যাগ লক্ষ্য করুন।
৭. খাবার ও পানি
-
ট্রেনে হালকা খাবার এবং পানি সঙ্গে রাখুন।
-
বিশেষ রাতের ট্রেনে যদি খাবারের সুবিধা না থাকে, তবে নিজের খাবার সঙ্গে নেওয়া নিরাপদ।
৮. শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য সতর্কতা
-
শিশু ও বৃদ্ধদের পাশে রাখুন এবং জ্ঞান দিয়ে ট্রেনের জানালা বা দরজা থেকে দূরে রাখুন।
-
দীর্ঘ যাত্রার সময় মাঝে মাঝে হাঁটাচলা করানো ভালো।
৯. জরুরি পরিস্থিতি
-
যদি ট্রেন স্থগিত বা দেরি হয়, স্টেশনের রেলওয়ে অফিস থেকে অবিলম্বে তথ্য নিন।
-
অনলাইনে টিকিট থাকলে ফোনে বা ওয়েবসাইটে যাচাই করুন।
🔟 যাত্রা পরিকল্পনা ও আরাম
-
ট্রেন যাত্রার আগে পানি ও খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
-
হেডফোন বা বই থাকলে যাত্রা আরও উপভোগ্য হয়।
-
রাতের ট্রেনে ঘুমের জন্য হালকা চাদর বা কম্বল সঙ্গে রাখুন।
🚆 কুমিল্লা থেকে সিলেট রুটে ট্রেনের বিভিন্ন শ্রেণী ও সুবিধা
কুমিল্লা ↔ সিলেট রুটে ট্রেন ভ্রমণের সময় যাত্রীদের আরাম, বাজেট এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ক্লাসে আসন সুবিধা পাওয়া যায়। নিচে প্রতিটি ক্লাসের সুবিধা ও বিবরণ দেওয়া হলো:
১. শোভন (Shovon)
-
ভাড়া: ≈ ১৪৫ টাকা
-
ধরন: সাধারণ সিট, নন-এসি
-
উপযুক্ত: কম বাজেটের যাত্রী
-
সুবিধা:
-
আরামদায়ক সাধারণ সিট
-
ছোট ব্যাগ রাখা যায়
-
দিনের ট্রেনে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত
-
২. শোভন চেয়ার (Shovon Chair)
-
ভাড়া: ≈ ১৭০ টাকা
-
ধরন: চেয়ার সিট, নন-এসি
-
উপযুক্ত: মাঝারি বাজেটের যাত্রী
-
সুবিধা:
-
ব্যক্তিগত সিট, পেছনে রিক্লাইন করা যায়
-
দিনের ভ্রমণের জন্য বেশি সুবিধাজনক
-
নন-এসি হওয়া সত্ত্বেও আরামদায়ক
-
৩. স্নিগ্ধা (Snigdha)
-
ভাড়া: ≈ ৩১৮ টাকা
-
ধরন: আরামদায়ক কোচ, এসি সিট বা এসি নন-এসি (বহু ট্রেনে)
-
উপযুক্ত: পরিবার বা স্বাচ্ছন্দ্যপ্রিয় যাত্রী
-
সুবিধা:
-
শীতল এসি বা ভেন্টিলেশন
-
প্রশস্ত সিট
-
দীর্ঘ যাত্রায় আরামদায়ক
-
সাধারণত রাতের ট্রেনে বেশি ব্যবহার হয়
৪. প্রথম সিট (First Seat)
-
ভাড়া: ≈ ২৩৮ টাকা
-
ধরন: প্রিমিয়াম সিট, নন-এসি বা সীমিত এসি
-
উপযুক্ত: যারা বেশি আরাম চান, তবে স্লিপার নয়
-
সুবিধা:
-
ব্যক্তিগত স্পেস
-
শীতল বা হালকা বাতাস
-
ছোট ব্যাগ/ল্যাপটপ রাখতে সুবিধা
-
৫. প্রথম বার্থ (First Berth)
-
ভাড়া: ≈ ৩৪০ টাকা
-
ধরন: স্লিপার বার্থ, নন-এসি বা এসি নির্ভর ট্রেনে
-
উপযুক্ত: রাতের যাত্রী ও পরিবার
-
সুবিধা:
-
শোবার সুবিধা
-
দীর্ঘ যাত্রায় বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত
-
ব্যক্তিগত বা ছোট গোষ্ঠীর জন্য সুবিধাজনক
-
৬. এসি সিট (AC Seat)
-
ভাড়া: ≈ ৩৯১ টাকা
-
ধরন: এসি কোচ, সিট টাইপ
-
উপযুক্ত: যারা আরাম ও ঠান্ডা পরিবেশে ভ্রমণ করতে চান
-
সুবিধা:
-
সম্পূর্ণ এসি
-
আরামদায়ক রিক্লাইন সিট
-
ব্যাগ রাখার সুবিধা
-
দিনের ট্রেনে বেশি জনপ্রিয়
৭. এসি বার্থ (AC Berth)
-
ভাড়া: ≈ ৫৮৭ টাকা
-
ধরন: স্লিপার, এসি কোচ
-
উপযুক্ত: দীর্ঘ রাতের ভ্রমণ, পরিবার বা অফিস যাত্রা
-
সুবিধা:
-
সম্পূর্ণ এসি এবং আরামদায়ক
-
ব্যক্তিগত শোবার সুবিধা
-
ঘুমিয়ে ভ্রমণ সম্ভব
-
রাতের ট্রেনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত
-
💡 অতিরিক্ত তথ্য
-
প্রতিটি ক্লাসে ব্যাগ রাখার সুবিধা আছে, তবে বেশি বড় ব্যাগ হলে উপরের র্যাক ব্যবহার করতে হয়।
-
এসি কোচের টিকিটের দাম বেশি, কিন্তু আরাম ও সেবা তুলনামূলক ভালো।
-
শোভন বা শোভন চেয়ার বাজেট-ফ্রেন্ডলি হলেও দীর্ঘ যাত্রায় আরাম কম হতে পারে।
-
পরিবারের সঙ্গে যাত্রা হলে স্নিগ্ধা বা AC বার্থ সবচেয়ে সুবিধাজনক।
উপসংহার
সিলেট থেকে কুমিল্লা রেলপথে ভ্রমণ — বিশেষ করে যদি আপনি আগে থেকেই সময়সূচী এবং টিকিট পরিকল্পনা করে রাখেন — হয়ে যায় একদমই ঝামেলাহীন, আরামদায়ক ও সময়োপযোগী। উপরের তথ্যগুলো (ট্রেন, সময়, ভাড়া) মাথায় রেখে আপনি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজান


.webp)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url